করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য সরকার আরও বেশি প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভ্যাকসিনের জন্য আগাম বুকিং দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী সবাইকে মাস্ক পরার আহŸান জানান। বিরোধীদলীয় উপনেতার স্কুল খুলে দেওয়ার প্রস্তাবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল খুলে দিয়ে বাচ্চাদের মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারি না। তিনি বলেন, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে স্কুল খুলে তারা আবার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের দেশেও স্কুল খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হওয়ায় ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় স্কুল খুলে বাচ্চাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারি না। বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী-মুজিব বর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন ও সংসদের দশম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার যৌক্তিকতা নেই মন্তব্য করে তা খুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। একটা দেশ দিয়ে গেছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি বিধ্বস্ত দেশকে উন্নত-সমৃব্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সরকারি ও বিরোধী দল সবাই আলোচনা করে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব পাস হওয়ায় তিনি সবার প্রতি ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণগুলো প্রচার করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জাতির পিতা নিজে সুখ-শান্তি কিংবা সন্তানদের সুখের কথা ভাবেননি। তিনি দেশের মানুষের সুন্দর ভবিষ্যতের
স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি দ্রæততার সঙ্গে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চেয়েছিলেন। এ কারণেই তিনি সব দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে একটা ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর কোনো ক্ষমতার লোভ ছিল না। সংবিধান পরিবর্তনের সময় ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সংসদে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা বাজানোর জন্য স্পিকারের প্রতি আহŸান জানান। পরে সংসদে সেই ভাষণ বাজিয়ে শোনানো হয়।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, যত্রতত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রী নেই। নামসর্বস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে এমপিওভুক্ত করার আবেদনও করা হচ্ছে। এটা একটা নিয়মনীতির মধ্যে আনতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর সংসদের অধিবেশন সমাপ্তসংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা পড়ে শোনার স্পিকার।