চট্টগ্রাম মহানগরীতে তিন বছর আগে ফাতেমা আক্তার মীম (৯) নামে এক শিশুকে ধর্ষণের পরে হত্যার দায়ে ৮ আসামির সবাইকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক জামিউল হায়দার এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় ৮ আসামির ৭ জন কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। বাকি একজন পলাতক রয়েছে। আসামিদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।
মামলায় সরকার পক্ষের কৌঁসুলি এমএ নাসের জানান, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি আসামিরা শিশু ফাতেমা আক্তার মীমকে তুলে নিয়ে গিয়ে আকবর শাহ এলাকায় আয়শা মমতাজ মহল নামে একটি ভবনে গণধর্ষণ করে। এরপর শ^াসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। রাত ১০টার দিকে পুলিশ ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির পাশ থেকে মীমের লাশ উদ্ধার করে। স্থানীয় ফাতেমাতুজ জোহরা মহিলা মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মীমের বাবা জামাল উদ্দীন একটি ওয়াশিং প্লান্টে শ্রমিকের কাজ করেন। রাজা কাশেম কলোনিতে তারা ভাড়া বাসায় থাকে। লাশ উদ্ধারের পর তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৫ আসামিকে গ্রেফতার করে। মীমের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে আকবর শাহ থানা এলাকায় মামলা করেন। গ্রেফতার আসামিরা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে অন্য দুই আসামিকেও গ্রেফতার করা হয়। এক আসামি শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে। আদালত মামলা চলাকালে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণে দায়ী হওয়ায় আদালত ৮ আসামির সবাইকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেÑ বেলাল হোসেন বিজয় (১৮), রবিউল ইসলাম রুবেল (১৬), হাসিবুল ইসলাম লিটন (২৬), আকসান মিয়া হাসান (১৮), সুজন (২০), মেহেরাজ টুটুল (৩২), শাহাদাত হোসেন সৈকত (১৯) এবং ভবনের কেয়ার টেকার মনিরুল ইসলাম মনু (৪৯)। এর মধ্যে শাহাদাত হোসেন সৈকত পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, বাদী এবং আসামিদের সবাই নগরীর আকবর শাহ থানাধীন বিশ^ব্যাংক কলোনি এলাকায় বসবাস করত। মীমের মায়ের সঙ্গে আসামি বেলাল হোসেন বিজয়ের মায়ের বিরোধ ছিল। তাই প্রতিশোধ নিতে সে অন্যদের সংগঠিত করে তাদের যোগসাজশে শিশু মীমকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করে। বিজয়ের বাড়ি নগরীর পতেঙ্গা থানা এলাকায়। রুবেলের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া, লিটনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী, হাসানের বাড়ি সিলেটের জগন্নাথপুর, সুজনে বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট। এদের সবার বাবা শ্রমজীবী। এরা বিশ^ব্যাংক কলোনি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে।