দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৫৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ১ হাজার ৫৩৭ জনকে নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৮১ হাজার ২৭৫ জন হয়েছে। এ সময়ে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৪৮২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৭৩ জন হয়েছে। মঙ্গলবার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সবশেষ এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। তা সাড়ে ৩ লাখ পেরিয়ে যায় ২১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ১০ অক্টোবর তা সাড়ে ৫ হাজারে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
শুরুর দিকে দেশে সংক্রমণ হয়েছে ধীরগতিতে। মে মাসের মাঝামাঝি সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে শুরু করে। আর জুনে সংক্রমণ পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করে। মাসদুয়েক ধরে দৈনিক নতুন রোগীর সংখ্যা কমেছে। এ সময়ে করোনা পরীক্ষাও আগের চেয়ে কম হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা না আসা পর্যন্ত নতুন এই ভাইরাস প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে আছে বাইরে বের হলে মাস্ক পরা, কিছু সময় পরপর সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং লোকসমাগম এড়িয়ে চলা। এ সবকটি একসঙ্গে মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে শিথিলতা বাড়লে সংক্রমণ আবার যেকোনো সময় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। বিশে^ এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ পেরিয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১০ লাখ ৮১ হাজারের ঘরে। জনস হপকিন্স বিশ^বিদ্যালয়ের তালিকায় বিশে^ শনাক্তের দিক থেকে ষষ্ঠদশ স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ২৯তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১০৯টি ল্যাবে ১৩ হাজার ৮১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ২০ লাখ ৯৮ হাজার ৩৭টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ১৩ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৭ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ২২ জনের মধ্যে বিশোর্ধ্ব একজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব একজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব তিনজন এবং ষাটোর্ধ্ব ১৪ জন। বিভাগ অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ২২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রামে পাঁচজন এবং রংপুর বিভাগে দুজন রয়েছেন।