করোনাভাইরাসে দেশে আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে মোট ৭ হাজার ৭৫৬ জন। এই সময়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬৯২ জন। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ২১ হাজার ৩৮২ জন হয়েছে। বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৭৮৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৬৪ জন হয়েছে।
অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে নমুনা পরীক্ষা বাড়লেও শনাক্ত করোনা রোগী কমেছে। তবে এই সময়ে মৃত্যু বেড়েছে। আগের দিন ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল করোনাভাইরাসে, যা গত আট সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত ৯ মে’র পর সবচেয়ে কম।
শনিবার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাড়লেও শনাক্তের সংখ্যা ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ কমেছে। একইভাবে মৃতের সংখ্যা ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ কমেছে। আবার সুস্থতার হারও কমেছে ২৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২২ জন মারা গেছে, তাদের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন, নারী ৭ জন। এই ২২ জনের মধ্যে ২১ জনই হাসপাতালে মারা গেছে; আর বাড়িতে মারা গেছে ১ জন। করোনাভাইরাসে পুরুষের সংক্রমণ হার বেশি। দেশে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫ হাজার ৮৯৫ জন পুরুষ। নারী মারা গেছেন ১ হাজার ৮৬১ জন।
মৃত ২২ জনের মধ্যে ১৭ জনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। এ ছাড়া ৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। আর ২ জনের বয়স ছিল ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে মারা গেছে ১৭ জন। বাকিদের মধ্যে ২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী ও ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা।
এ পর্যন্ত যারা মারা গেছে তাদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়, ষাটোর্ধ্ব রোগীদের মৃত্যুর হার ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বয়সি রোগীদের মৃত্যুর হার ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সি রোগীদের মৃত্যুর হার ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সি রোগীদের মৃত্যুর হার ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বয়সি রোগীদের মৃত্যুর হার ২ দশমিক ০৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সি রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ ও শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সি রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে মৃতের হার ঢাকা বিভাগে ৫৫ দশমিক ১৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, খুলনায় ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, বরিশালে ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ, সিলেটে ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ, রংপুরে ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে মারা গেছে ৪ হাজার ২৭৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৪৩০ জন, রাজশাহীতে ৪৪৭ জন, খুলনায় ৫৩৯ জন, বরিশালে ২৩৯ জন, সিলেটে ২৯৪ জন, রংপুরে ৩৫০ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১৭৮ জন।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। তা ৫ লাখ পেরিয়ে যায় ২০ ডিসেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনে শনাক্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যু হয়। ২৯ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। বিশে^ শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ কোটি ৬৪ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮ লাখ ৬৯ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ^বিদ্যালয়ের তালিকায় বিশে^ শনাক্তের দিক থেকে ২৭তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৬তম অবস্থানে।